মোবাইল রিচার্জ পোস্ট করে! প্রতি পোস্ট এ সর্বোচ্চ ৫/= করে,১০ টাকা জমলেই মোবাইলে টাকা যাবে। বিস্তারিত ও অ্যাকাউন্ট খুলতে নিচে যোগাযোগঃ
ই-মেইলঃ gfahim38@gmail.com
ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/fahimfaysal.sowrav
ছেলেরা মনোযোগ দিয়ে পড়বেন ।মেয়েরা কেমন সার্থপর। ১টা ছেলেপাখি ১টা মেয়েপাখিকে খুব ভালবাসে, হঠাৎ ১ দিন মেয়ে পাখিটি পায়ে খুব ব্যথা পেয়ে পা হারালো, মেয়ে পাখিটি কাদতে কাদতে ছেলে পাখিকে বললো,তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো, ছেলে পাখিটি একথা শুনে তার নিজের ২ টি ডানা কেটে দিয়ে বললো 'এবারতো আমি চাইলেও তোমাকে ছেড়ে যেতে পারব না.. ১দিন বড় ১টা তুফান এসে তাদের ঘর ভেঙ্গে দিল, তখন ছেলে পাখি মেয়ে পাখিকে বলেছে তুমি চলেযাও নিরাপদ জায়গায়, আমার কথা চিন্তা কর না,? মেয়ে পাখিটা তার কথা শুনে উড়ে চলে গেল নিরাপদ জায়গায়.. ঝর, তুফান থামার পর মেয়ে পাখিটা ফিরে এসে দেখলো ছেলে পাখিটা মরে পড়ে আছে, পাশে মাটিতে লেখা ছিল.."তুমি যদি ১বার বলতে আমি তুমাকে ছেড়ে যাবো না তাহলে আমি ঝর,তুফান কে উপেক্ষা করে বেচে থাকতাম শুধু তোমার জন্য।........!
প্রিয়জনকে দেয়ার জন্য কোনো মেসেজ খুজে পাচ্ছেন না? তাহলে নিচের পোস্ট টি আপনার জন্যই।
1.
প্রতিক্ষণে পড়ে মনে তোমার কথা,
তোমার জন্য আমার এতো ব্যাকুলতা।
হারিয়ে যাই ভাবনার সাগরে তোমায়
ভেবে। মনের ঘরে স্বপ্ন সাজাই
তোমায় নিয়ে। কেনো থাকো আমায় ছেঁড়ে দূরে দূরে, আমিতো পারিনা এক মুহূর্ত থাকতে তোমায় ভুলে। তুমি হীনা নিঃশ্ব লাগে নিজেকে। শুন্যতা আসে নেমে এই হৃদয় জুড়ে।
2 ভাল বাসা কখনো মরে না, ভালবাসা ফিরে আসে বার বার, যদি কেউ তার হারানো ভালবাসা বুজতে পারে, তবে সে যেন তা বুজে নেয়।
3
যে দিন আমি থাকবনা
সেদিন তুই কার উপর রাগ করবি
অভিমান করে বলবি
আমি তোকে ঘৃণা করি
হয়তো সেদিন তুই বুঝতে পারবি আমি তোর কতো আপন ছিলাম
4 বল তুই আমায় ছেড়ে কোথায় যাবি ? বল তুই আমায় ছাড়া ক্যামনে রবি ।। তোর পরাণে আমার এ মন বান্ধিয়াছি সারা জীবন তোরে ছাড়া বাঁচি না ।। বল তুই আমায় ছেড়ে কোথায় যাবি ? বল তুই আমায় ছাড়া ক্যামনে রবি
5 যতটা ভালবেসেছি তোকে,,...
ততটা আর কাউকে বাসিনি।।
যতটা কান্না করেছি তোর
জন্য প্রতি রাতে,
তত টা অশ্রু আর কারো জন্য ঝরেনি।। যতটা প্রহর গুনেছি তোর অপেক্ষায়,, ততটা হয়তো আর কারো জন্যই করিনি।। এখনও কি বুঝবি না রে অবুঝ যে তোকে কতটা ভালবাসি???
6
কখনো জানতে চাওনি তুমি,
কেমন আছি আমি?
দুরে থাকি বলে ভাবছো
ভুলেই গেছি তোমায় তাইনা?
ভাবছো আমি অন্য কাওকে নিয়ে ভাবি? সবি যদি বুঝ তাহলে কেন বুঝনা আমি তোমায় কতটা মিস করি. আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি
7 স্বপ্ন এলো আমার কাছে" নীল প্রজাপতির বেসে বললো তোমায় নিয়ে যাবো রুপ কথার দেশে অনেক মজার স্বপ্ন তুমি" সেই দেশেতে পাবে বন্ধু তুমি আমার সাথে সেই দেশে কি যাবে.
8
তুমি লাল টিপ পরেছিলে বলে
অস্তগামী সূর্যটা লাল আভা ধারন করেছিল
দীঘির শান্ত জলেও ঢেউ এসেছিল
লাগামহীন ছুটেছিল দমকা বাতাস
রংও পাল্টালো বুঝি বিশাল আকাশ।
9 'অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন । সবাই ভালোবাসি বলতে পারে কিন্তু সবাই অপেক্ষা করে সেই ভালোবাসা প্রমাণ করতে পারে না'। 10 ভাল লাগে আকাশের নিলিমা কাল মেঘ নয়,... ভাল লাগে হালকা বৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড় নয়,... ভাল লাগে কষ্ট পেতে, কষ্ট দিতে নয়,... ভাল লাগে তোমাকে অন্য কাউকে নয়............
শহর থেকে অনেক দিন পর গ্ৰামে যাচ্ছি।তাই ভাবলাম আমার শহরের বন্ধদের গ্ৰামে নিয়ে যাব।বাবাকে বললাম বাবা আমার বন্ধরাও আমার গ্ৰামের বাড়িতে যাবে।কারণ আমারা আজ থেকে ছয় বছর আগে গ্ৰাম ছেড়ে শহরে এসেছি।কিন্তু বাবা গ্ৰামের বাড়ি,জায়গা কিছুই বিক্রি করননি।বাবা দুই,তিন মাস পর গিয়ে দেখে এসেছে।আমি আর আমার মা এইবার যাব।আমি গ্ৰাম থেকে শহরে আসার পর আমার দুই বন্ধ বারবার বলেছে যখন গ্ৰামে যাবি আমাদের নিয়ে যাবি।তাই ওদের নিয়ে যাওয়া।ওদের একজনের নাম রনি আর অন্যজন হল রাকিব।আমারা শহর থেকে গ্ৰামে যখন যাচ্ছি।যাওয়ার সময় আমি কিছুই চিনতে পারলাম না।মনে হচ্ছে আমি অচেনা জায়গায় যাচ্ছি।তার পর আমরা আমাদের বাড়িতে গেলাম।রনি ও রাকিব ওরা দুজন খুব খুশি।এরপর আমি রনি ও রাকিব ঘুরতে বের হলাম।আমি গ্ৰামের কিছু চিনতেই পারলাম না।তার পর আমরা বাড়িতে ফিরে এলাম।পরদিন আমরা ঘুরতে বের হলাম।দেখলাম একটি কদম গাছ।মনে পরল সেই আগের ঘটনা।এই কদম গাছের নিচে আমরা ছোট বেলায় অনেক খেলা করেছি।তখন মনে পরল ছোট বেলার বন্ধদের কথা।ছোট বেলায় আমরা এই কদম গাছের নিচে অনেক মজা করেছি।হঠাৎ রনি আমাকে বলল তুই এখানে দাড়ালি কেন।আমি বললাম এই সেই কদম গাছ।যেখানে আমি আমার অতীত পার করেছি।এই কদম গাছের নিচে আমরা অনেক সময় অতিবাহিত করেছি।যার জন্য বাবা আমাকে বকা দিতেন।খুজলাম আগের বন্ধ রাহিমকে কিন্তু কিছুতেই তাকে খুজে পেলাম না।তারপর খুজলাম অনিলকে।খোঁজ পেলাম অনিলের।কিন্তু অনিলেরাও গ্ৰামে থাকে না।কোন জায়গায় গেছে কেউই বলতে পারল না।তারপর আর কয়েক বন্ধ কে খুজলাম কিন্তু কোনও এক কারনে কারও খোঁজ পেলাম না।কয়েক দিন কাটল এভাবে।তারপর আমরা যেদিন আসব সেদিন দেখা শেষবার ঘুরতে গেলাম দেখলাম একটা মেয়েকে।সে তার বাচ্চাকে নিয়ে আছে।বললাম তুমি কি ফারজানা ও বলল আপনি কে।আপনাকে আমি চিনিনা অথচ আপনি আমার নাম জানেন।আমি বললাম আমি রাহুল ।ও তখন বলল তুমি ।তখন শুনলাম ওর বিয়ে হয়েছে।তখন ওর থেকে সব কিছু শুনলাম । তখন আমার যাওয়ার সময় হয়েছিল ।তখন আসতে মন বলছে আরও থেকে যায়।কিন্তু বাধ্য যেতে হচ্ছে।যাওয়ার আগে দেখলাম সেই কদম গাছকে আরেক বার।
লেখক:Rafiul islam prince ফেসবুক নাম: Exceptional Prince
অনেক দিন পর সাগর কে দেখে আমি অবাক হলাম । কারণ সে তার মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করে।তার মা তাকে শুধু বুঝিয়ে বলে বাবা তুমি দিন দিন এই রকম হয়ে যাচ্ছ কেন ।তোমাকে কি কেউ কিছু বলেছে।সাগর কে আমি বললাম," সাগর খারাপ আচরণ করতে নেই।" তখন সাগর আমাকে বলল , "আপনাকে এর মধ্যে কে কথা বলতে বলেছে ? " এই বলে সাগর চলে গেল। সাগরের তিন বৎসর যখন তখন তার বাবা মারা গেছে।সাগর দের পরিবারে কেউ নেই রোজগার করার।সাগরের মা খুব ভাবে তার ছেলেকে নিয়ে কারন সাগর বখাটে ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরা করে।
এর জন্য সাগরের মাকে কত কি শুনতে হয় কত লোকজনের কাছে।সাগরের মা খুব কাদে তার ছেলের জন্য।সাগর এখন সিগারেট খায়।আমি দেখলাম আমি সাগরকে নিষেধ করলাম বললাম," সাগর ধূমপান মাধ্যমে মানুষ মারা জায়।তোমার অনেক টাকা নষ্ট হয়।" কিন্তু কিছুতেই সে আমার কথার দাম দিল না।আমার বাসার সাথেই সাগর এর বাসা। হঠাৎ শুনলাম মদ খেয়ে রাস্তা দিয়ে আসার পথে গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মারা আমি চমকে উঠলাম।আর বললাম একি হল।আর সাগর এর মা এই কথা শুনার পর আর কিছু না বলে পাগল হল।আজও দেখি সাগর এর মাকে।আর ভাবি সেই আগের কথা।।
-- সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ দিন মুখে স্ক্রাব করতে হবে। এখন বাজারে অনেক ধরনের স্ক্রাব পাওয়া যায়। বিশেষ করে সাইট্রিক এসিড, গ্লিসারিন অয়েল, ফ্রুট যুক্ত স্ক্রাবগুলো ছেলেদের স্কিন এর জন্য অনেক ভাল হয়। কারণ স্ক্রাব ত্বক থেকে ধুলা, অতিরিক্ত তেল দূর করে স্কিনকে পরিষ্কার করে তোলে।
-- রাতে ঘুমানোর আগে একটা আইস কিউব নিয়ে সম্পুর্ণ মুখে ভালোভাবে ঘষে নিন। এতে করে ত্বকে রক্ত চলাচল সচল থাকে। আর ত্বকের রক্ত সঞ্চালণ প্রবাহ ভালো থাকলে ত্বক দ্রুত উজ্জ্বল হয়। এরপর যেকোনো একটা মশ্চারাইজার ক্রীম লাগিয়ে আঙ্গুল দিয়ে ঘষে ম্যাসাজ করে নিন।
-- একটা লেবু কেটে খোসাসহ মুখে ভালভাবে ঘষে নিন। লেবুর সাইট্রিক এসিড আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি মুখের কালো দাগ দূর করে ত্বককে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে।
-- প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে শসা খুব উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শসার টুকরো দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। প্রতিদিন ব্যাবহারে ত্বক অনেক পরিষ্কার হয়। এছাড়া শসার রস ত্বকে প্রাকিতিক মশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
-- এক চামুচ কাচা হলুদের সাথে কাচা দুধ মিশিয়ে পেষ্ট তৈরী করে সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। কাঁচা হলুদ ত্বকের কোমলতা ধরে রাখে এবং কাঁচা দুধ স্কিনের কমপ্লেকশনকে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে।
-- অ্যালোভেরার জেলোতে প্রচুর পরিমানে আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফাটা ত্বক সারিয়ে তুলতে অনেক উপকারী। সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন অ্যালোভেরা জেলো মুখে মেখে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে নিন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো বের করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল করে তোলে।
-- শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু অনেক উপকারী। আধা চামুচ মধুর সাথে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
একটা ছেলেকে তার গার্লফ্রেন্ড প্রশ্ন করলো,"তুমি তোমার মাকে কতখানি ভালোবাসো??" ছেলেঃ আমার নিজের জীবনের থেকেও বেশি। গার্লফ্রেন্ডঃ যদি তোমার মা বৃদ্ধা হয় যায় তখন কেমন ভালোবাসবে?? ছেলেটি তার পকেট থেকে ১০০০টাকার একটা চকচকে নোট বের করলো আর বললো,"এর মূল্য কত??" গার্লফ্রেন্ডঃ ১০০০টাকা। ছেলেটি হাত দিয়ে নোটটি মোচরানোর পর বললো," এখন এর মূল্য কত??" গার্লফ্রেন্ডঃ (অবাক হয়ে) ১০০০.টাকা।
তারপর ছেলেটি নোটটি কে পায়ের নীচে নিয়ে দলাই করলো এবং আবার জিজ্ঞেস করলো ,"এখন মূল্য কত??" গার্লফ্রেন্ডঃ (একটু বিরক্ত হয়ে) ১০০০ টাকা। ছেলেঃ আমার মা'ও আমার কাছে এই ১০০০ টাকার মতো। যতই বৃদ্ধা হোক না কেনো, আমার কাছে তার মূল্য সব সময়ই সমান।
মাইসেল বাজারে এনেছে ইউনিক স্টাইলিশ ডিজাইনের SPIDER A1 মডেলের একটি নতুন স্মার্টফোন । এটি 4.5 ইঞ্চি FWVGA IPS স্ক্রিনের সব থেকে ছোট
স্মার্টফোন । IPS স্ক্রিন এর ফলে নিখুঁত ও স্পষ্ট ছবি দেখা যাবে। এছাড়াও এ স্মার্টফোনটি চলবে হাতের ঈশারায় । এতে করে যেমন সময় বাচঁবে তেমনি ব্যস্ত সময়ে স্মার্টফোন ব্যবহার হবে আরো সহজ। নতুন এই ফোনে আরো রয়েছে Android version 4.4 OS (Kitkat)। 1.3 GHz ডুয়াল-কোর প্রসেসর, 4 জিবি রম, 512 MB RAM (3G) নেটওয়ার্ক স্পিড।
আছে ডাবল সিম ব্যবহারের সুবিধা (একটি মাইক্রো সিম অন্যটি নরমাল সিম), রয়েছে সামনে 1.3 মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সাথে সেলফি ফ্লাস এবং পিছনে ৮ মেগাপিক্সেল সাথে অটো ফ্ল্যাশ- ফলে পাওয়া যাবে নিখুঁত সেলফি ও ছবি তোলার সুযোগ, HD ভিডিও প্লেব্যাক, জিপিএস, কুইক Gesture, ডাবল ক্লিক ওয়েকআপ, লাইট সেন্সর, প্রক্সিমিটি সেন্সর, জি সেন্সর, Motion সেন্সর, Heart বিট রেট সেন্সর ,মাল্টি user mode এবং এফএম রেডিও রেকর্ড করার সুবিধা, ওয়াই-ফাই, ব্লটুথ ও হটস্পট সুবিধাসহ নানান অত্যাধুনিক সুবিধা। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন লি-আয়োন ১৬৫০ এমএএইচ ব্যাটারি যা দেবে দীর্ঘ চার্জের নিশ্চয়তা। অত্যাধুনিক ও আর্কষনীয় কনফিগারেশনের সেটটির মূল্য ৫৪৯৯টাকা মাএ। সাথে থাকছে (Flip Cover, Attractive Head Phone, Screen Protector) ফ্রি…। স্পাইডার এ১ (SPIDER A1) মডেলের স্মার্টফোন পাওয়া যাবে আগামী সপ্তাহে নিকটস্থ যে কোন মোবাইলের আউটলেটে ।
সবজি গুলো এভাবে কাটতে পারেন। গাঁজরকে সিদ্ব করে নরম করে নিন। অন্য সবজি সিদ্ব করার দরকার নেই।
চাউল পানিতে সামান্য লবন যোগে সিদ্ব করে ফুটিয়ে নিন। বেশি নরমও নয়, আবার বেশী সিদ্বও নয়!
ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে চাউল গুলো ঝরঝরে করে ফেলুন এবং পানি ঝরিয়ে রেখে দিন।
তেল গরম করে কয়েকটা কাঁচা মরিচ যোগে ডিম গুলোর ঝুরি বানিয়ে ফেলুন।
এবার মুল রান্নার জন্য কড়াইতে তেল গরম করুন, এক চামচ ঘি দিতে পারেন। প্রথমে
তেল গরম হয়ে গেলে এক চিমটি লবন যোগে পেয়াজ কুচি ও আদা বাটা ভাজুন এবং
চিকেন গুলো দিয়েও ভেজে নিন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে পারেন। চিকেন
সিদ্ব হয়ে চমৎকার রং ধরে যাবে।
এবার ধীরে ধীরে সবজি দিতে থাকুন এবং ভাজুন।
সব সবজি দিয়ে দিন।
সবজি গুলো সিদ্ব হয়ে এমন মোলায়েম রং ধরে যাবে। ঝাল চাইলে আরো কাঁচা মরিচ দিতে পারেন।
সবজি গুলো সিদ্ব হয়ে এমন মোলায়েম রং ধরে যাবে। ঝাল চাইলে আরো কাঁচা মরিচ দিতে পারেন।
বাটিতে থাকা কয়েক চামচ মিক্স সসেস দিন এবং নাড়ুন।আবারো কিছু চাউল দিন।
বাকী মিক্স সসেস দিয়ে দিন। এভাবে চাউল এবং সসেস দেয়ার কারন হচ্ছে যাতে সব ভাল করে মিক্স হয়।
খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে এমন একটা অবস্থায় এসে যাবে।
চাউল দেখে নিন। এবার ডিমের ঝুরি (যা আগে করে রাখা হয়েছিল) দিয়ে দিন। এবং নাড়ান।
এই তো হয়ে গেল! ফাইন্যাল লবন দেখুন, লাগলে দিন না লাগলে ওকে বলুন।
১. মুরগির হাড় ছাড়া মাংস হাফ কেজি
২. রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ
৩. পেঁপে পাতলা করে কাটা আধা কাপ
৪. গাজর পাতলা করে কাটা আধা কাপ
৫. পেয়াজ কিউব আধা কাপ
৬. চিচিঙ্গা আধা কাপ
৭. পাতা কপি আধাকাপ
৮. ফুলকপি আধা কাপ
৯. মটরসুটি আধাকাপ
১০. চালকুমড়া আধা কাপ
১১. কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ
১২. কাঁচামরিচ ফালি ৪-৫টি
১৩. লবণ স্বাদমত
১৪. গোল মরিচ গুঁড়া হাফ চা চামচ
১৫. লেবুর রস ২ টেবিল চামচ
১৬. সয়াসস ১ টেবিল চামচ
১৭. অলিভ ওয়েল/ সাদা তেল ৩ টেবিল চামচ
১৮. লেমন গ্রাস ৩/৪ টুকরা
প্রণালি :
মুরগির
হাড় ছাড়া মাংস সেদ্ধ করে উঠিয়ে রখুন। ওই পানিতেই সবগুলো সবজি সিদ্ধ করে
ফেলুন। এক্ষেত্রে যেটি সিদ্ধ হতে বেশী সময় লাগে সেটি আগে চুলায় দিন। তারপর
ক্রমানুসারে অন্যগুলো দিন। (উদাহরণ স্বরূপ : আমি গাজর আর ফুলকপি আগে
কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নিয়ে তারপর বাকি গুলো দিই) সবজি গুলো সিদ্ধ হবার পর যেন
সামান্য পানি অবশিষ্ট থাকে। এঅবস্থায় একটি ফ্রাইং প্যানে সামান্য তেল নিয়ে
রসুন কুচি ও মুরগির মাংস গুলো নিন। ভাজা হয়ে গেলে তা সবজির পাতিলে ঢেলে
দিন। একটি কাপে দুই থেকে আড়াই চামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার নিয়ে পানিতে গুলিয়ে
রাখুন।এরপর সবজির পাতিলে একে একে লবণ, লেবুর রস, গোল মরিচের গুড়া এবং সয়া
সস দিন। সব শেষে কাপে গুলানো কর্ণ ফ্লাওয়ার ঢেলে হালকা নেড়ে নামিয়ে ফেলুন|
রাত আড়াইটা।
রাস্তায় একটা সাদা কুকুর কিছুক্ষণ পরপরই ডেকে উঠছে, আর তখন ওর পিছনে থাকা
কালো কুকুরটাও এদিক ওদিক সবদিক দৌড়ে তারস্বরে চিৎকার করছে।
একটানা অনেকদিন শরীর খারাপ থাকায় সূর্যের আলো গায়ে মাখার সুযোগ হয়নি, তাই আজ চাঁদের আলোতে স্নান করে দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছি।
আমাকে দেখে মনে হয় সাদা কুকুরটার পছন্দ হয় নি। তাই দাঁত মুখ খিঁচিয়ে কয়েকবার ঘেউ ঘেউ করে উঠল।
কুকুরদের ভাষা আমার জানা নেই, তবে আমার মনে হয় কুকুরটা আমার পরিচয় জানতে
চেয়ে চিৎকার করছে। এখনো হয়তো বুঝে উঠতে পারছে নাহ আমি চোর না সাধু কোন
গোছের। দাঁতমুখ খিঁচানোর হয়তো সেটাই কারন। সারমেয় ভাষাতে হয়তো বুঝিয়ে দিতে
চাইছে এ এলাকাতে তাঁর উপর দাদাগিরি চলবে নাহ। পৈতৃক সূত্রে এলাকার নেতা না
হলেও সে যে নিজেকে এই এলাকার একচ্ছত্র অধিপতি ভাবে সেটা তাঁর হাবেভাবে
স্পষ্ট ফুটে উঠছে। অন্তত যাতে তাঁকে অনুসরণ করা কালো কুকুরটা আর তাঁর
পেছনের দেয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা কুকুরগুলোকে তো তাঁর বুঝানো দরকার তাঁর
ক্ষমতার ব্যপ্তি কত বিশাল পরিমাণের।
বাঘে ছুলে আঠারো ঘা, পুলিশে
ছুলে বত্রিশ ঘা। সুন্দরবনের সব বাঘ এখন চিড়িয়াখানার খাঁচায়, না হলে
ধানমন্ডি ২ এর নেতা খ্যাতা টাইপ লোকদের বাসাতে সোফার শোভাবর্ধন করছে। একবার
খাঁচার ভেতরে থাকা এক বাঘকে মানুষের মাথা লাগিয়ে দাঁড়ি মোচসহ বিড়ি ফুঁকতে
দেখেছিলাম। সময় তখন বর্ষাকাল, দর্শনার্থীর আনা গোনা ছিল নাহ, এরকম নির্জন
অবস্থায় হঠাত আমাকে দেখতে পেয়ে হাসি হাসি মুখ করে আমার দিকে এগিয়ে এসেছিল।
আমি খাঁচার বাইরে থাকলেও ঝেড়ে দৌড় লাগাই, কে জানে আমার কাছে যদি গাজার
স্টিক আবদার করে বসে, তখন? তাই বাঘের সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা বাদ, বাবা
পুলিশে চাকরি করে অবসর নিয়েছিলেন, তাই পুলিশের সাথেও ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা বাদ।
তারপরও কোন নতুন কনস্টেবল হঠাত থানায় ধরে নিয়ে গেলে সেখান থেকে কিভাবে যেন
১০ মিনিটের ভেতর ছাড়া পেয়ে যাই। দুই তিনজনের ব্যাপারে ধারণা করতে পারি
আমাকে ছাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখার, কিন্তু কাজটা আসলে কে করে সে ব্যাপারে
সঠিক অনুমান কখনো করে উঠতে পারি নি।
বাঘ, পুলিশ বাদ। দাঁড়িয়ে আছি
কয়েকটা চ্যালা নিয়ে ঘিরে দাঁড়ানো নেতা টাইপ কুকুরটার সাথে। আমাকে সে তাঁর
নিজস্ব ভাষাতে প্রশ্ন করেছে, উত্তর দিতে না পারলে আমাকে কামড়ে দেবার সমূহ
সম্ভাবনা আছে। আচ্ছা, কুকুরে ছুলে কত ঘা?
দাঁতমুখ খিঁচিয়ে আমিও বার
কতক সারমেয় ভাষার মত করে ঘেউ ঘেউ করে উঠলাম। উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা জানি
নাহ, তবে সাদা কুকুরটাকে কিছুটা বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে। কালো কুকুরসহ বাকি
কুকুরগুলো সরে যেয়ে রাস্তা করে দিল হাঁটার। এই সুযোগ ঝটপট কেটে পড়ার, কেটে
পড়ছিও প্রায়, এমন সময় আবার সেই কলিজা ঠান্ডা করা সারমেয় ধ্বনি।
দৌড়
দেবার কথা মনে আসল একবার, কিন্তু সাথে সাথেই সেটা বাতিল করে দিলাম। এদের
মনস্তত্ত্ব অনেকটা সাধারণ পাবলিকের মত। যাদের ধমক দিলে কুই কুই করে ওঠে,
যেন এখুনি কেঁদে দিবে। কিন্তু যেই একবার বুঝবে আপনি চিপাতে, তখন মারা দিতে
দিতে একেবারে ভরে দিবে।
মেজাজ খুব গরম হয়ে গেল, কিছু না বলে সিম্পল
'ইগনোর কর' নীতিতে হেঁটে যেতে থাকলাম। অন্য কুকুরগুলো একটা হেভিওয়েট চিৎকার
যুদ্ধ দেখার জন্য অনেক আগ্রহ নিয়ে ওয়েট করলেও আমার রণে ক্ষণ দেয়া দেখে
খুবই আশাহত হলো মনে হয়।
রোজার মাস, মুখের চুল দাঁড়ি শেভ না করায় আর
প্রতিদিনের দাঁত ব্রাশটা আজ না কাল করে গড়িমসি করাতে চেহারা দেখে যে কারো
মনে করার কথা আফ্রিকা থেকে আমার আগমন ঘটেছে। দিনের বেলা রাস্তায় বের হলে
হঠাত করে কোন বাংগালীর মুখে সোহাহিলি বা বাওয়ালি ভাষার অভিবাদনও শুনে বসতে
পারি। রোজার ঠিক আগে হাত কাঁটাটা খুব ভালোই ভোগাল এ কয়দিন। এখন হাতে ফাঁক
হয়ে যাওয়া চামড়া জোড়া লেগে গেলেও খুব বড় একটা কাটা দাগের অস্তিত্ব ঠিকই রয়ে
গেছে, মাঝে মাঝে হাতে টানও অনুভব করি।
কুকুরগুলো এখন ঠিক আমার পেছন
পেছন দলবদ্ধ হয়ে হাঁটছে, সাদা কুকুরটা, তাঁর পেছনে কালো কুকুরটা, তাঁর
পেছনে তাদের বাকি চ্যালা চামুন্ডারা। রাস্তাতে এখনো কিছু লোকের হালকা পাতলা
আনাগোনা থাকায় তাঁরা এ দৃশ্য দেখে অবাক ও নির্বাক। আমি কোন প্রকার
ভাবভংগির ধার না ধেরে চুপচাপ হেঁটে চলছি, পেছনে সারমেয়কুল। মাঝে এক হুজুর
গোছের দাড়িওয়ালা টাইপ লোককে দেখে সাদা কুকুরটা চাঁপা গলাতে ঘড় ঘড় করে উঠল,
হুজুর তৎক্ষণাৎ বাড়ির ভেতরে ঢুকে পগারপাড়।
কোন দিকেই কোন খেয়াল না রেখে কোন বিশাল ভাবুকের মত হাঁটছি, সংগে একপাল কুকুর।
এ ক'দিন বাসাতে বসে থাকাকালীন অবসরের সময় কাঁটাতে যখন ফেসবুকে লেখালেখি নিয়মিত করলাম, তখন এক মেয়ের সাথে পরিচয়।
একদিন হঠাত ফোনে আননোন নাম্বার হতে কল আসল, আমি আবার আননোন নাম্বার হতে
আসা কলগুলো খুব আগ্রহের সাথে ধরি। একবার এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা তাঁর ছেলেকে
ফোন দিতে যেয়ে আমাকে ভূলে ফোন দিয়েই শুরু করে দিয়েছেন, 'কালামানিক, বাবা
আমার, সোনা আমার, কেমন আছোস তুই?'
আমিও তখন গলাতে খুব আবেগ ঢেলে জবাব দেই, 'মুই খুব ভালা আছুইন মা। তুই কিবা আছুত?'
আমার গলার স্বরে বা কাঁচা অভিনয়ে এক সময় তিনি যখন বুঝতে পারেন আমি তাঁর
কালো মানিক বা ফুটবলার পেলে কোনটাই নাহ, তখন অভিসম্পাত করতে করতে ফোনটা
কাটেন, আর আমি বেডে শুয়ে জানালার ওপাশটা ভালোমত দেখার চেষ্টা করি।
কিছুক্ষণ পর পুনরায় মহিলাটির ফোনকল ঠিকই আসে, তবে এবার সেখানে না থাকে আবেগ
না থাকে রুক্ষতা। কাঁদ কাঁদ স্বরে বেদনার্ত গলায় আমাকে তিনি জানান, তাঁর
পেলে নাকি এখন সত্যিই প্লেয়ার হয়ে গেছে। মার প্রতি তাঁর এখন আর কোন অনুভূতি
কাজ করে নাহ, তাঁকে নাকি ইচ্ছামত গাল পেরে আর কখনো ফোন না করার ধমক দিয়ে
ফোন কেটে দিয়েছে সে। মহিলা তখন আমার কাছ থেকে পাওয়া আবেগময় কথার সাথে তাঁর
ছেলের কথার তুলনা করে আর হাহাকার করেন শুধু। আমি তখন কিছু না বলে চুপ করে
ফোনটা কেটে দেই, কিছু কিছু সময় থাকে, যখন শান্তনার চেয়ে কেঁদে বুক ভাসালেই
কষ্ট বেশি লাঘব হয়।
যথারীতি তাই সেদিনও ফোনটা রিসিভ করি, ওপাশ থেকে
হ্যালো শুনতেই কিছুটা নিরাশ হলাম। মনে হচ্ছে যেন একটা বাচ্চা মেয়ে খিল খিল
করে হাসছে আর কথা বলছে।
- অ্যাই তুমি নীল?
- না, আমি ব্লু। কি চাই?
- হিহিহি, তোমার পাঞ্জাবীতে পকেট আছে?
- না, তবে প্যান্টে পকেট আছে, রেডিমেড প্যান্ট, পকেট থাকেই।
- তাইলে তুমি কিসের হিমু হইলা? হিমুদের তো পকেট থাকে নাহ।
- হলুদ হিমু হওয়া সহজ, কিন্তু নীল হিমু হওয়া কঠিন দেখে কেউ হতে চায় নাহ, কিন্তু আমি নীল হিমু।
- তাই নাকি? আচ্ছা, আমি যদি নীল হিমুর নীলিমা হতে চাই তাহলে কি করতে হবে আমায়?
- আপাতত বসে বসে মুড়ি খেলেই চলবে। আজান দিয়েছে, ইফতারী করছি, তুমিও করো।
- খাইছে, নেশাখোরদের যে ধর্মভীতি থাকে সেটা জানা ছিল নাহ।
- আজব, ধর্মভীতি আসবে কই থেকে, নেশাখোরদের রোজা রাখতে নিষেধ আছে নাকি?
- না তা নেই, কিন্তু আমার জানামতে নেশাখোর ছেলেদের ধর্মের প্রতি কোন আগ্রহ, ভয় কোনটাই থাকে নাহ।
- আমারও খুব একটা যে আগ্রহ বা ভয় আছে ধর্মের প্রতি তা নাহ। এটার আগমন মূলত বিশ্বাসের উপর থেকে।
- সে সাথে ভয়ও।
- ধর্মে ভয় দেখিয়ে ছাগল খেদানোর মত করে বোকাদের ধর্ম পালন করতে বাধ্য করা
হয়, আর যার বুদ্ধিমান তাঁরা ধর্মটাকে আঁকড়ে ধরেন মূলত বিশ্বাসের উপর থেকে।
- ধূর তোমার সাথে কথায় পারা যাবে নাহ। শোন, এতকিছু বুঝি নাহ, এখন থেকে আমি
তোমার গার্লফ্রেন্ড। আমি যেটা বলব সেটাই সত্য বলে মেনে নিবা, না হলে চিমটি
খাবা। আমার রাগ হলে রাগ ভাংগাবা, না হলে চিমটি খাবা। আমায় কাঁদালে চিমটি
খাবা, বুঝতে পারছ?
- হু, বুঝছি, এখন থেকে ভাত না খেলেও চলবে আমার, তোমার চিমটি খেতে খেতেই পেট ভরে যাবে আমার।
- কি বললা? জোরে বলো, শুনি নাই।
- কিছু নাহ, আচ্ছা রাখছি এখন, পরে কথা হবে।
মেয়েটাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিলাম। ওর নামটা জিজ্ঞাসা করা হয় নি, পরে একসময় জেনে নিতে হবে।
রাস্তায় কুকুরগুলো এখনো পিছু পিছু আসছে, আমিও হেঁটে চলেছি, উদ্দেশ্যহীন, গন্তব্যহীন।
সিগারেট খাবার জন্য খুব মন খুব আনচান করলেও কোন চায়ের দোকান খোলা পেলাম নাহ। হয়তো রোজার মাস বলেই দোকানগুলি বন্ধ।
এক লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম, সাথে সাইকেল, সেটায় একটা ছোটখাট ব্যাগের মত কি যেন।
তাঁকেই জিজ্ঞাসা করলাম, 'ভাই সিগারেট কই পাওয়া যায়?'
'কি সিগারেট?'
'গোল্ড লীফ, দুইটা হলেই হয়। আছে?'
সে তাঁর ব্যাগ হতে একটা লীফের প্যাকেট হতে দুটো গোল্ড লীফ বের করে দিল।
খুব খুশি মনে ব্যাটাকে বিশ টাকার একটা নোট দিতে সেটা নিজের পকেটে চালান করে দিল। বাকী দেবার কোন নাম গন্ধ নাই।
চাইতেই সে বলল, 'ভাই রাতের রেট এটা। আর লাগবে আপনার?'
আর কথা না বাড়িয়ে হাঁটতে লাগলাম, পথে টহলরত এক পুলিশের গাড়ির সামনে পড়ে গেলাম।
- বাসা কই?
- যেখান থেকে আসছি।
- যান কই?
- বিড়ি খাইতে।
- ঐ রশিদ, এই হালারে একটু চেক কর তো, কথার ভাবভংগি ভালা লাগতেছে নাহ।
- চেক করার কি আছে, আমার কাছে যন্ত্রপাতি আছে কিনা সেটা চেক করতে চাইছেন?
শুধু শুধু কষ্ট করবেন কেন? আছে রে ভাই আছে, আমার কাছে যন্ত্রপাতি আছে।
- আবে হালা কস কি? ঐ রশিদ ধর হালারে, নগদে হ্যান্ডকাফ লাগা, ঐ আবুল গাড়ি স্টার্ট দে।
- স্যার, হাতকড়া লাগানো লাগানো লাগবে নাহ, আমি নিজেই আপনাদের সাথে যাচ্ছি।
জেরারত দারোগাটি বিভ্রান্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, কি করবেন বুঝতে পারছেন নাহ,
আমি নিজে গাড়ীর ভেতরে উঠার সাথে সাথে আমাকে অনুসরণ করে গাড়ীতে উঠে বসলেন
চুপচাপ।
থানায় পৌঁছার পরপরই ওসির রুমে তলব পড়ল আমার। ওসির গায়ে পুলিশের শার্ট, কিন্তু পড়নে লুংগি।
শার্টের ব্যাজে আক্কাস বি মাইনাস লেখা, কথাটার অর্থ ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম নাহ।
মানুষ এখন পরীক্ষাতে এ প্লাস পেলেও সেটা কাউকে জানানোর প্রয়োজনবোধ করে নাহ, এ প্লাস এতটাই সস্তা।
সেখানে এই লোক ব্যাজে নামের পাশে বি মাইনাস ঝুলিয়ে রেখেছে কোন আক্কেলে? সে
সারজীবন পরীক্ষাতে বি মাইনাস পেয়েও এখন থানার ওসি এটা মানুষকে দেখাতে?
মাথায় তাঁর টাক চকচক না করলেও সেখানে চুলের অভাব দেখতে পাচ্ছি। যেসব ওসির
মাথায় চুল কম থাকে, তাঁরা ভীষণ বদরাগী হয়ে থাকে শুনেছি। আক্কাস সাহেবের
মুখে আক্কাস বিড়ি না থাকলেও একটা গোল্ড লীফ সাঁই সাঁই করে জ্বলছে। বিড়ির
সাথে সাথে তাঁর মুখে একটা হাসির ধারাও দেখতে পাচ্ছি। মনে হয় এই লোক সবসময়
মুখে হাসি ধরে রাখা টাইপ পাবলিক। দেখা গেল কেউ এসে তাঁকে জানাল যে তাঁর
ছেলে অ্যাক্সিডেন্ট করেছে, তখন তিনি মুখের হাসি হাসি ভাবটা ধরে রেখেই হয়ত
তাঁর স্ত্রীকে বলবেন, 'এই শোন, খোকা অ্যাক্সিডেন্ট করেছে, আমি বের হয়েছি,
তুমি কোন চিন্তা করো নাহ কেমন?' অন্যদিকে কর্তব্যরত অধস্তনকে ডেকে হাসি
হাসি মুখে বলবেন, 'রফিক সাহেব, ছেলেটা অ্যাক্সিডেন্ট করেছে, আমি একটু বের
হলাম, আপনি এদিকটা দেখে রাখবেন।' রফিক সাহেবের মাথায় কথাগুলো পুরোপুরি কাজ
করার পূর্বেই হয়ত তিনি বের হয়ে গেছেন ততক্ষণে।
আমার দিকে তাকিয়ে তিনি সিগারেটের ফাঁক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এখনো মুখে হাসি হাসি ভাবটা বহাল আছে,
- নাম?
- নীল।
- কি কর?
- পড়ি আর হাঁটি।
- এই দুইটা কাজ একসাথে করা যায় নাকি?
- জি স্যার, ট্রাই করে দেখবেন একবার, খুব বেশি মজা পাবেন পড়ে।
- হুম, কি কারনে থানায় আনা হইছে তোমাকে?
- কেন স্যার, কারন ছাড়া এখানে আসা কি বাড়ন?
- প্রশ্নের উত্তর প্রশ্ন দিয়ে কর কেন?
- আপনি এমন প্রশ্ন করতেছেন যা তাঁর উত্তর প্রশ্ন দিয়েই সঠিকভাবে দেয়া যায়।
-হুম, চা, বিড়ি, গাজা, অভ্যাস আছে?
- অভ্যাস না থাকলেও অনভ্যস্ত নই, তবে রোজার মাস বলে শুধু চা আর সিগারেটেই চলবে আমার।
- আচ্ছা, তুমি বসো আমি আসতেছি একটু।
আমার দিকে সিগারেটের প্যাকেটটা বাড়িয়েই পাশের রুমে যেয়ে আমাকে যিনি ধরেছিলেন, সেই দারোগাকে ডাক দিলেন তিনি।
তাঁর সাথে কতক্ষণ চাঁপাস্বরে কথা বলে গেলেন তিনি। কিছুক্ষণ তর্জন গর্জন করে চললেন, অতঃপর ফিরে আসলেন ধীরে ধীরে।
- তোমার কাছে যন্ত্রপাতি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করার সাথে সাথেই স্বীকার করতে গেলে কেন?
নাও তো করতে পারতে।
- মিথ্যা বলা আমার স্বভাবে নেই।
- ও আচ্ছা, তা শুনি তোমার যন্ত্রপাতির বিবরণ।
- স্যার কি সত্যিই শুনতে আগ্রহী?
- হ্যাঁ, বলতে থাকো।
- এটি দেখতে ঘন কালো, আপনি রয়েল ব্ল্যাক বলেও অভিহিত করতে পারেন। আশেপাশে
কখনো চুল থাকে, কখনো থাকে নাহ। খুবই স্পর্শকাতর, তাঁর মানে এই নাহ যে
স্পর্শে কাতুকুতু লাগার মত অনুভূতি হয়, বরং তখন সগর্জনে রেগে মেগে ফুঁসে
ওঠে।
- হয়েছে হয়েছে থাক আর বলতে হবে নাহ। ফাজিল পোলা, ফাইজলামী করো
পুলিশের সাথে? কানের নিচে একটা বয়রা খাইলে পুরা সিধা হয়ে যাবা বজ্জাত ছেলে
কোথাকার।
- স্যার, আপনার আগের ওসিও একই কথা বলেছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়ে পোস্টিং নিয়ে নিজ ইচ্ছাতে বান্দরবান চলে গিয়েছিলেন।
- তবে রে হারামজাদা।
হাসি হাসি মুখটা হঠাত করে বদলে গেল, টেবিলের উপর হতে লাফিয়ে আমাকে চড়ানোর
একটা প্রবণতা দেখা গেল আক্কাস সাহেবের ভেতর। ঠিক তখনই একটা ফোন আসল ওসি
সাহেবের অফিশিয়াল টেলিফোনে।
ফোনটা বেজেই চলছে ক্রমাগত। আমাকে
চড়াবেন নাকি ফোনটা ধরবেন সেটা নিয়ে কিঞ্চিত দ্বিধাগ্রস্ত তিনি। সময় খুব
খারাপ যাচ্ছে, কার না কার ফোন সেটা না ধরে কোন অহেতুক ভোগান্তিতে হয়তো পড়তে
চান নাহ।
তাঁকে দ্বিধা হতে মুক্তি দিতে বলে উঠলাম, 'স্যার ফোনটা ধরুন,
হয়তো আপনার ছেলের রক্তের গ্রুপের সাথে ম্যাচ করে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া
গেছে।'
কথাটা শোনার সাথে সাথেই চমকে উঠলেন তিনি, টেলিফোনটা উঠালেন,
তাঁকে শুধু হ্যালো বলতে শুনলাম, এরপর কতক্ষণ তিনি হু হা করে গেলেন। ডায়ালটা
নামানোর পর শুধু অস্ফুটে গলাতে এটুকুই বলতে শুনলাম, 'ফাক।'
আমার
দিকে তাকালেন, একটা ফোনকলেই তাঁর চোখমুখের ভাব পাল্টে গেছে। কিছুটা বিস্ময়
এসে ভর করেছে তাঁর চোখেমুখে। সাধারণত পুলিশরা বিস্মিত হয় নাহ, তাঁদের এই
অনুভূতিটা চাকরির দিন বৃদ্ধির সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তাদের অনুভূতি
থাকে তিনটা, রাগ, ক্রোধ এবং ভয়। তাই হঠাত ওসি সাহেবকে বিস্মিত হতে দেখে
কিছুটা উপভোগই করছিলাম ব্যাপারটা।
নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলে
উঠলেন, 'আমার ছেলের রক্ত লাগবে সেটা কিভাবে জানেন আপনি? আর ওর ব্লাড গ্রুপ
ম্যাচ করার মত কাউকে খুঁজে পাচ্ছি নাহ সেটাও বা কিভাবে বুঝলেন?'
পুলিশদের অন্য আরেকটা যে স্বভাব আমাকে খুব মজা দেয় সেটা হলো তাঁরা যে কোন
সময় আপনি, তুমি, তুই নামক সম্বোধনগুলোর একটা হতে অন্যটায় চলে যেতে পারে।
- সেটা অনুমান করেছি। বাদ দিন সেই কথা। তা আপনার ছেলের জন্য ডোনার পেয়েছেন কি?
- হ্যাঁ পাওয়া গেছে, কিন্তু এখনো আরো দুই ব্যাগ লাগবে, কি যে করব বুঝতে পারছি নাহ।
হঠাত নিজের কথাগুলো আমার কাছে বলতে শুরু করাতে কিছুটা লজ্জিত বোধ করা শুরু
করলেন আক্কাস সাহেব। 'আমার কথা বলা শুরু করে দিলাম অকারণে। আপনার কথা
বলুন, ঠিক কি কারনে এরকম থানাতে আগমনের ইচ্ছা হলো আপনার? নিন, সিগারেট
নিন।'
সিগারেট জ্বালিয়ে গল গল করে ধোঁয়া ছাড়ার আগ পর্যন্ত কিছুই বললাম নাহ, তাঁর উৎসুক দৃষ্টিকে সম্পূর্নরূপে উপেক্ষা করে গেলাম।
ধোঁয়া ছাড়ার পর বললাম, 'আসলে কোন কারন ছিল নাহ, অনেকদিন পর আজ ঘর হতে বের
হয়েছিলাম, বাসাতে ফেরার পথে পেট্রোল ডিউটিতে থাকা পুলিশের গাড়ীটা দেখি। তখন
মনে হলো, অনেকদিন থানার ভেতরে আসা হয় নাহ, তাই একটু ঘুরে আসি।'
কিছুক্ষণ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন ওসি সাহেব, তারপর
বললেন, 'মন চায় আপনাকে নিয়ে ফুটবল খেলি। কিন্তু কেন জানি সেটা করতে পারছি
নাহ। বিদায় হন সামনে থেকে। থানার আশেপাশে আপনাকে যেন আর না দেখি।'
থানার গাড়ীতে করে আধা রাস্তা যখন পার হলাম, তখন ড্রাইভারকে গাড়ী থামাতে বলে
পুনরায় হাটা শুরু করলাম। হাঁটতে হাঁটতে এলাকাতে পৌঁছে গেলাম একসময়।
রাস্তার কুকুরগুলো যেন এতক্ষণ ধরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। আমাকে দেখেই
সাদা কুকুরটা কঠিন এক হাঁক ছাড়লো, সারা জীবনেও মনে হয় নাহ কুকুরটা এত জোরে
ডাক দিয়েছে। এরপর হাঁক ছাড়লো কালো কুকুরটা, এরপর বাকি কুকুরগুলো একসাথে।
অনেকটা অভ্যর্থনা জানবার মত করে। আমি ওদের ছেড়ে খানিক এগোতেই সাদা কুকুরটা
পেছন পেছন আসতে লাগল। সাদা কুকুরটার পেছনে কালো কুকুরটা। কালো কুকুরটার
পেছনে ওদের বাকি চ্যালাগুলো।
হুজুর টাইপ লোকটার বাসা যখন অতিক্রম
করছিলাম, তখন দোতালা হতে হালকা কথা ভেসে আসতে লাগল, দুইটা পুরুষ কন্ঠের
ফিসফাস। একজনের আর্তধ্বনি, অন্যজনের চরম পুলক প্রাপ্তির উল্লাস।
সেহরির সময় ডিসোফ্যান খাওয়াতে পরদিন পুরোটা সময় ধরে ঘুমালাম, খালি ইফতারের
আগমুহূর্তে সেই বয়স্ক ভদ্রমহিলার একটানা ফোনে ঘুম ভাংগল। মহিলা নিজেকে এখন
অনেকটাই শক্ত করে নিয়েছেন, আমাকে তাঁর পুত্রের মত শাসন করেন, আমিও বাঁধা
প্রদান করি নাহ। কথা বলতে বলতে এক সময় তাঁর ছেলের ফোন নাম্বারটা নিয়ে
রাখলাম। কেন নিলাম, জানি নাহ, কিন্তু মনে হলো নেয়া দরকার, তাই নিয়ে নিলাম।
রাতে আবার বের হলাম, কাব্য ছেলেটার কোন খবর নেই গোটা মাস ধরে, ওকে নিয়ে আমি বেশি একটা চিন্তাও করছি নাহ।
রাতে বের হয়েই আবার কুকুরগুলোর সাথে দেখা হয়ে গেল, আজকেও অনুসরণ করছে, তবে
কিছুটা দূরত্ব রেখে। নিজেকে কুকুরদের নেতা ভাবতে কেমন যেন লাগছে।
হুজুর টাইপ লোকটার বাসা হতে আজও আগের রাতের মত একজনের চাপা আর্তনাদ এবং
অন্যজনের উল্লাসধ্বনি ঠিকই শুনতে পেলাম। হঠাত কি মনে হতে ভদ্রমহিলার থেকে
পাওয়া তাঁর ছেলের নাম্বারে ফোন দিয়ে বসলাম। তখন দোতালার চাঁপা শব্দ হওয়া
ঘরটার উল্লাস করতে থাকা পুরুষকন্ঠটার কিছুটা বিরক্তময় গলা শুনতে পেলাম। 'এই
সময় কোন হালায় ফোন দেয়...' ফোনটা কেটে দিয়ে পুনরায় সামনে হাঁটতে থাকি।
আগের রাতের সেই বিড়ি বিক্রেতাকে আজও পেয়ে গেলাম। বেটা যে আজকেও টাকা মারবে
সেটা আগে থেকেই জানা থাকার পরও এক প্যাকেট লীফ দিতে বললাম। ঠিক তখন
গতরাতের পেট্রোল গাড়ীটা সামনে এসে হাজির হলো। আজকেও আগের দিনের সেই দারোগা
এগিয়ে আসছে।
- গাড়ীতে উঠুন, স্যারের নির্দেশ।
- (বিড়ি
বিক্রেতাকে দেখিয়ে) ও আমার কাছে টাকা পায়, কিন্তু আমার কাছে কোন টাকা নেই।
টাকার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত এখান থেকে যেতে পারছি নাহ।
- তাহলে এই ব্যাটাকেও সাথে করে নিয়ে আসুন আমাদের সাথে।
বিক্রেতা ছেলেটা প্রচন্ড আকারের ভয় পেয়ে গেছে। সিগারেট প্রতি ২/৩ টাকা
লাভের জন্য রাতে ব্যবসা করে সে, কিন্তু মনে হয় নাহ, আজকের পর আর কখনো রাতে
বিক্রি করতে নামবে সে।
গাড়ী থানা যাবার রাস্তাতে না যেয়ে ডানদিকের
রাস্তাটা ধরল। আমি সিগারেটের প্যাকেট হতে একটা সিগারেট ধরালাম। বিক্রেতা
ছেলেটা ইতিমধ্যেই ভয়ে কাপছে। কথা বলে জানতে পারলাম, ওর নাম আরিফ, বয়সে আমার
চেয়ে ৩/৪ বছর ছোট হবে।
সিগারেটে টান দিতে দিতে ভাবছি ওসি সাহেব
আমাদের জামাই আদর করতে ডাকলে থানাতেই নিয়ে যেত, কিন্তু তা না করে অন্য
কোথাও যখন নিচ্ছে তখন এনকাউন্টার করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে নাহ।
পরদিন পত্রিকার শিরোনাম কি হতে পারে সেটা ভেবেই শিহরিত হয়ে উঠলাম। পুলিশের
সাথে তুমুল বন্দুকযুদ্ধে কুখ্যাত সন্ত্রাসী নীল ও তাঁর এক চ্যালা নিহতঃ
বিপুল পরিমাণে অস্ত্র উদ্ধার, আহত ১ জন পুলিশ।
কিন্তু সেটা বাস্তবে পরিণত হতে পারল নাহ, যখন গাড়ী থামার পর নেমে দেখি আমাদের একটা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
আমি আরিফকে নিয়ে কেবিনে পৌছাতেই আমাদের দেখে বাচ্চাদের মত কেঁদে উঠলেন
শক্ত স্নায়ুর ওসি ও একজন বাবা আক্কাস সাহেব। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতেই বলে
উঠলেন, 'নীলদা, নিজের জানামতে কোন পাপ করি নাই সজ্ঞানে। তাহলে কিসের
শাস্তি দিচ্ছে খোদা আমাকে? মাত্র এক ব্যাগ রক্ত দরকার, তাহলেই ডাক্তার
অপারেশন শুরু করতে পারেন, কিন্তু আমি কি বাবা হয়ে আমার ছেলের দরকারের সময়
এভাবেই চুপচাপ অথর্ব হয়ে থাকব?'
উত্তরে তাঁকে কিছুই বললাম নাহ। মানুষের আবেগ অনুভূতির খুব একটা দাম নেই আমার কাছে, কখনোই ছুঁয়ে যায় নাহ আমাকে।
সামনে তাকিয়ে দেখলাম একটা ৯/১০ বছরের বাচ্চা শীর্ণ দৃষ্টিতে তাঁর মায়ের
কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। প্রথম যে জিনিসটা মাথায় আসল তখন, মহিলা এখনো
কিভাবে শান্ত আছেন।
এগিয়ে গেলাম বেডের দিকে, পিচ্চিটাকে জিজ্ঞাসা করলাম, 'কি রে ব্যাটা,কেমন আছিস?'
'ভালোই তো আছি কাকু, কিন্তু দেখ না, বাবা শুধু শুধু ভয় পাচ্ছে।'
'তোর অপারেশন করতে দেরি হলে কিছু হয়ে যায় কিনা, সেটার ভয় পাচ্ছে সে।'
'হুহ, আমার কোন কচুও হবে নাহ। বাবা বলেছে, তোমার নাকি সুপার পাওয়ার আছে, আমাকে ঠিক করে দিতে পারবে মুহূর্তেই, কি পারবে নাহ?'
আড়াআড়ি দৃষ্টি বিনিময় হলো আক্কাস সাহেবের সাথে, 'কেন পারব নাহ? অবশ্যই পারব। তাঁর আগে বল, অপারেশন থিয়েটারে নিলে ভয় পাবি না তোহ?'
'না কাকু, একদমই নাহ, কিন্তু তুমি একটু তাড়াতাড়ি করো, মাথায় খুব ব্যাথা করছে।'
আক্কাস সাহেবের দিকে তাকালাম, 'ডাক্তার ডাকুন, আরো এক ব্যাগ রক্ত দেবার লোক পেয়ে গেছেন।'
আমার কথা শুনে চোখের পানি মুছে ডাক্তার ডাকতে গেলেন আক্কাস সাহেব।
আরিফের দিকে তাকালাম, 'রক্ত দিতে পারবে তো?'
'কি যে কন আপনে? এত সুন্দর একটা পিচ্চিরে বাঁচাইতে নিজের জান দিবার পারুম।'
আরিফের ব্লাড টেস্ট করে দেখা গেল সেটা আক্কাস সাহেবের পিচ্চি ছেলে, অরিনের সাথে ম্যাচ করছে।
হাসপাতালে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ। অরিন অপারেশন থিয়েটারে, আরিফও সেখানে,
রক্ত দিতে। আমি আর আক্কাস সাহেব দুজনেই সিগারেট ধরালাম। হাসপাতাল
বারান্দাতে থাকা অন্যান্য রোগীদের আত্মীয়ের কাছে এবং অন্য পুলিশদের কাছে
সিগারেট বেচা শুরু করে দিলাম। লীফ ১০ টাকা, বেনসন ১৫ টাকা। কেউই না করছে
নাহ বা প্রতিবাদ করছে নাহ।
মাঝে সময় করে আক্কাস সাহেবের ব্যাজে বি
মাইনাস লেখার রহস্য জানতে চাইলাম। তিনি যখন বললেন ওটা তাঁর রক্তের গ্রুপ,
কারো রক্তের প্রয়োজন হলে যাতে তাঁকে সহজেই খুঁজে পেতে পারে, তাই এমনটা করা।
আরিফকে নিয়ে বের হয়ে আসলাম, অরিন এখন ইনটেনসিভ কেয়ারে থাকবে ৪৮ ঘন্টা।
আসার সময় যে গাড়ীতে করে এসেছিলাম সেটাতে করেই ফিরে যাচ্ছি। হুজুরের চেহারা
মতন লোকটার বাড়ির সামনে নামলাম আমরা। নামার পর এখনো চলে যাচ্ছি নাহ দেখে
সেদিনের সেই দারোগা সাহেব আজ বিনীত গলাতে বলে উঠলেন, 'স্যারের কি এখানে
বিশেষ কোন কাজ আছে? আমরা কি সাহায্য করতে পারি?'
'হ্যাঁ, কাজ আছে একটা, তবে কোন সাহায্য নেব নাহ আপনাদের থেকে। আপনারা চাইলে সেটা দেখতে পারেন, তবে গাড়ীটা একটু আড়ালে সরিয়ে নিন।'
দারোগা সরে যেতেই আরিফকে বলে উঠলাম, 'তোর মা যে এখনো তোকে খুঁজে ফিরে সেটা তুই জানিস?'
আমার কথা শুনতেই কিছুটা চমকে উঠল সে, 'আমার মায়ের কথা আপনি কিভাবে জানলেন ভাই?'
'জানি, সেটা কোন একভাবে, সেটা কথা নাহ। কথা হচ্ছে, মায়ের কথা মনে পড়ে?'
'হ্যাঁ, ভাই, খুব বেশিই মনে পড়ে। পকেটে টাকা না থাকায় বাড়ি যেতে পারি নাহ,
এদিকে একদিন এক শালা ফোনটা চুরি করে নিয়ে গেছে দেখে মায়ের নাম্বারটাও
হারিয়ে ফেলেছি।' কাঁদতে কাঁদতে বলে ছেলেটা।
'কান্না থামা, না হলে মজা মিস করবি।'
ফোন দিলাম সেই নাম্বারটাতে, আবার দোতালার ঘর থেকে বিরক্তপূর্ণ স্বরে কেউ ধরল ফোনটা।
'এখুনি নীচে নামো, পুলিশ রেইড দিতে আসছে।' এটা বলে কেটে দিলাম। সাথে সাথে
অনেকগুলো কর্কশকন্ঠ শুনতে পেলাম বাড়িটা থেকে। হুটোপুটি, লুটোপুটির শব্দও
শুনতে পেলাম। হঠাত বাড়ির দরজা খুলে হুজুর টাইপ লোকটা বের হয়ে বাইরে কি
অবস্থা সেটা দেখতে উকিঝুঁকি মারা শুরু করল। সে খালি রাস্তাতে দু'জন মানুষ
এবং কয়েকটা কুকুর দেখল, যার ভেতর একটা কুকুর সাদা এবং একটা কালো কুকুরও
আছে।
পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হয়ে বাইরে বের হবার সাথে সাথে সাদা কুকুরটাকে বললাম, 'ধর।'
আমার বলতে দেরি, কিন্তু নির্দেশ পাবার সাথে সাথে সবগুলো কুকুর ঝাপিয়ে পড়লো
লোকটার উপর, পাঁচ মিনিটের ভেতর লোকটার গলা হতে কোন শব্দ আর পাওয়া গেল নাহ,
গলার টুঁটি কামড়ে ছিড়ে নিয়েছে সাদা কুকুরটা। একপাশে পড়ে থাকা ফোন আর
হাসপাতালে বিক্রি করা সিগারেটের সব টাকা ছেলেটার হাতে ধরিয়ে বললাম, 'কাল
বাড়ি যাবি। মায়ের সাথে একমাস থাকবি, টাকার দরকার পড়লে সেটা ওসি সাহেব
দেখবেন। আর ঠিক ফজরের আজানের পর তোর মাকে ফোন দিয়ে অনেকক্ষণ কথা বলে নিবি
আগে।'
ছেলেটা আমাকে জড়িয়ে ধরে এবার হাউমাউ করে কেঁদে উঠল, যেই একটু কথা
বলার চেষ্টা করছে, তখনই হেঁচকি উঠে সেটা জড়িয়ে যাচ্ছে। মানুষের আবেগ এত
বেশি কেন?
এতক্ষণ ধরে সব দেখতে থাকা পুলিশের গাড়ীটার কাছে যেয়ে
বললাম, বাড়ীটার ভেতরে কি হয় সেটা আর নাই বললাম, কিন্তু সেখানে থাকা সবগুলো
ছেলেকে আপনারা আজ উঠিয়ে নেবেন এবং ওদের আজকের ভেতরই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা
করবেন।
পুলিশের গাড়ীটা বাড়ির দিকে, আরিফ রাস্তার উল্টোদিকে আর আমি
কুকুরগুলোর সামনে থেকে বাসার দিকে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু আজ আর বাসাতে ফিরতে
মন চাচ্ছে নাহ। আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মনের সব কষ্টগুলো একসাথে
বর্ষণ করবে আজ এই ধরাধামে। আমি হাঁটতে লাগলাম, গন্তব্যহীন, লাগামহীন।
হেডফোনে এলি গোল্ডিংয়ের বিটিং হার্ট হাই ভলিউমে ছেড়ে দিয়ে হেঁটে চলেছি
গতরাত থেকে বৃষ্টির ভেতর। শরীর এবং ফোন দুটোই ভিজে একাকার, কিন্তু কোন
কিছুতে পাত্তা দিচ্ছি নাহ।
বাচ্চাদের মত হাসতে পারা মেয়েটা কাল
থেকে অজস্রধারায় ফোন এবং টেক্সট বর্ষণ করে গেছে, কিন্তু ইচ্ছা করেই কোন
রিপ্লাই দেই নি। সর্বশেষ টেক্সটটার অল্পাংশ চোখের দৃষ্টি আর এড়াতে পারল
নাহ। "কাল থেকে ভিজছ, আর কতক্ষণ? আমিও তোহ ভিজে একাকার, সর্দিও এসেছে,
ঠান্ডাও লেগেছে তো।"
টেক্সটটা দেখতেই সামনে এক অপরূপ মেয়ে এসে
হাজির। 'অ্যাই বোকা ছেলে, তুমি বৃষ্টিতে ভিজলে তোমায় এত বেশি নিষ্পাপ লাগে
কেন? চোখ ফেরাতে পারছি না তোহ। তুমি চাও বা না চাও নীলের নীলিমা কিন্তু আমি
হবই, হুহ।'
আমি কিছুই না বলে শুধু আমার বিভ্রান্তিকর হাসিটা হাসি।
সিলেটে শিশুশেখ সামিউল আলম রাজনকে(১৪) হত্যার আগে নির্মমভাবে নির্যাতনের
ভিডিওচিত্র প্রকাশ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওচিত্রটি এখন
মোবাইলের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুর
পৌনে ১টার দিকে হত্যার পর একটি মাইক্রোবাস যোগে (ঢাকা মেট্টো-চ-৫৪-০৫১৬)
শিশু রাজনের মরদেহ গুম করার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় শহরতলীর
কুমারগাঁও এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় এ খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মুহিত
আলমকেআটক করে জালালাবাদ থানা পুলিশ। আটকের পর তিনি পুলিশের কাছে ১৬১
ধারায় জবানবন্দিতে রাজন হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
এদিকে, হত্যার আগে রাজনকে চুরির অপবাদে নির্মম নির্যাতনের ভিডিওচিত্র প্রকাশ নিয়ে সিলেটসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওচিত্রে
দেখা যায়, নীল সার্টারের একটি দোকানের সামনে ও পরবর্তীতে একটি গ্যারেজে
নিয়ে রাজনকে খুঁটির সঙ্গে হাত পেছনে বেঁধে জিআই পাইপ দিয়ে পেটানো হচ্ছে।
পানির
জন্য হাহাকার করছেন রাজন। কিন্তু ঘাতকরা তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করছেন।
উপস্থিত কেউ একজন বলছেন, টাইগার এনার্জি ড্রিংস এনে খাওয়াতে। আবার অন্যজন
বিয়ার আনতে বলছেন।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে মুমূর্ষু রাজন তাকে পুলিশ
হেফাজতে দিতে আর্তি জানায়। তখন ঘাতকদের একজন অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে
বলেন, ‘তুই আমারে চিনিস’। রাজনকে নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিও ফুটেজটির এমন
দৃশ্য এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজন হত্যা মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত)আলমগীর হোসেন বলেন,
নির্মম নির্যাতনের ভিডিওচিত্রের একটি সিডি তাদের হেফাজতে এসেছে।
ভিডিওচিত্রটি
নিহতের বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসামিদের কেউ একজন এ
দৃশ্যটি ধারণ করেছে। এখন সবস্থানে এটি ছড়িয়ে গেছে।
নিহত রাজন
কুমারগাঁও বাসস্টেশন সংলগ্ন সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী
গ্রামের মাইক্রোবাস চালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে।
এ বিষয়ে প্রথমে
জালালাবাদ থানাপুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে নিহতের বাবা
বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওসি
(তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেনকে।
মামলায় গ্রেফতার হওয়া মুহিত আলম
ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- তার ভাই কামরুল ইসলাম, সহযোগীআলীহায়দার ওরফে
আলী ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তিনি বিষয়টি জানান।
ওসি
আকতার হোসেন বলেন, শিশু রাজনের মৃতদেহের বিভিন্ন অংশে ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন
রয়েছে। এজন্যই মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে সোমবার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রহমতউল্লাহকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে এসএমপি।
এর
আগে ৮ জুলাই মঙ্গলবার নির্মম নির্যাতন চালিয়ে শিশু রাজনকে হত্যা করা হয়।
এরপর মাইক্রোবাসে (ঢাকা মেট্টো-চ-৫৪-০৫১৬) করে তার মৃতদেহ গুম করতে নিয়ে
যাওয়ার সময় শহরতলীর কুমারগাঁও এলাকায় মুহিত নামে এক ঘাতককে আটক করে পুলিশ।
বিচার চাইলেন মা
সন্তানের বিছানায় লুটিয়ে
পড়ে বিলাপ করে বলেন, ‘কি দোষ ছিলো আমার পোলার।তারা আমার পোলারে নির্মম
নির্যাতন কইরা মারলো’।
‘পানির লাগি আমার সন্তানে ছটফট করছিলো। মৃত্যুর আগে এক ফুটা পানিও তারে
খাওয়াইছে না তারা। অরা কাফির, অরা মুনাফিক। আমার নিরীহ পোলাডারে যেলাখান
(যেভাবে) মারছে, আমিও তারা হকলর (সকলের) ফাঁসি চাই। আমি প্রধানমন্ত্রী’র
কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাই’।
কুটিনা বেগম বলেন, ‘আমার পোলারে সকাল ৭টা
থেকে ১১টা পর্যন্ত অত্যাচারের পর মাইরা ফালাইছে খুনিরা। আমার ছেলেরে তো আর
ফিরৎ পামু না। কিন্তু তার হত্যাকারীর শাস্তি চাই। আমার মতো আর কোন মায়ের
বুক যেন খালি না হয়।‘ এজন্য প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেন তিনি।
তিনি
আরো বলেন,‘আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পিটাইছে, সেই ভিডিও দেইখ্যা জ্ঞান
হারাইয়া ফেলি।’
গত ৮ই জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চোর সন্দেহে ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজনকে
নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ওইদিন দুপুরেই একটি
মাইক্রোবাসযোগে (ঢাকা মেট্টো-চ-৫৪-০৫১৬) তার মরদেহ গুম করার চেষ্টা হয়। এ
সময় শহরতলীর কুমারগাঁও এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় খুনিদের অন্যতম
মুহিত আলমকে আটক করে জালালাবাদ থানা পুলিশ।
ক্ষোভে ফেটে পড়ছে ফেসবুক
এরকম ক্ষোভ, এরকম প্রতিক্রিয়া- মানুষের একেবারে ব্যক্তিগত পর্যায়
থেকে, এতো স্বতঃস্ফূর্ত, অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে কোনো একটি ঘটনায় চোখে
পড়েনি।
সামাজিক যোগাযোগের এই সাইটটির হোম পেজে গেলেই স্পষ্ট বোঝা যায় এই নিষ্ঠুরতা মানুষজনকে কিভাবে নাড়া দিয়েছে।
সিলেটে ভিডিও ক্যামেরার সামনে এক কিশোরকে পেটানোর পর তার
মৃত্যুর ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ, ঘৃণা, যন্ত্রণা আর অসহায়ত্বের কথা ফেসবুকে
ছড়িয়ে পড়েছে।
তারা ছবি দিয়ে, স্ট্যাটাস লিখে, মন্তব্য
করে, এমনকি নিজেদের মন্তব্য দিয়ে তৈরি করা ছোট ছোট ভিডিও করেও সেসব পোস্ট
করছেন।
তাদের ক্ষোভ এতোটাই তীব্র যে কেউ
কেউ রাজন নামের ওই কিশোরকে যেভাবে ‘পিটিয়ে হত্যা’ করা হয়েছে,
নির্যাতনকারীদেরকেও সেই একইভাবে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই
দাবি জানিয়ে একজন মন্তব্য করেছেন, “আমার এ ইচ্ছায় মানবিকতা যদি আহত হয়,
রাষ্ট্র যদি নাখোশ হয়, তবুও নড়বো না একচুল এ দাবি থেকে ...।”
একজন লিখেছেন,“পাড়ার এমন কোন বাড়ি নেই যার গাছের ফল আমি
বা আমার বন্ধুরা চুরি করিনি! রাজন হত্যার ভিডিওটি দেখে খুব কষ্ট পেলাম! আর
সহ্য হচ্ছে না! তাই আমি চিৎকার করে বলছি; রাজনের মতো আমিও চোর! আমায় হত্যা
করো!”
আরেকজনের মন্তব্য এরকম:“ভিডিওটি দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল।
রাজনের অসহায় নিষ্পাপ মুখ দেখে মনে হল, পৃথিবীটা এত কদর্য হতে পারে, সেটি
মৃত্যুর খানিক আগেও বোধহয় সে বুঝতে পারেনি।”
কেউ লিখেছেন তারা
ভিডিওটি দেখতে চান নি। কারণ এটা দেখার সাহস নেই তাদের। যারা দেখেছেন তারাও
লিখেছেন যে কিছুক্ষণ দেখার পর তারা সেটা আর দেখতে পারেন নি।
একজন
মন্তব্য করেছেন:"রাজন, যে মাটিতে তুমি শুয়ে আছো এ তোমার দেশ ছিল। এখানেই
তুমি ভূমিষ্ঠ হয়েছো; হামাগুড়ি দিতে দিতে একদিন দাঁড়িয়ে এই দেশকেই তুমি
দেখেছ। আজ মাতৃভূমি তোমাকে যে দাম দিল- এ আমার জাতির লজ্জা। তোমার জীবনের
শেষ আর্তিগুলো ফ্রেম-বন্দি- কিন্তু আমি ভয়ে চোখ সরিয়ে নিয়েছি।”
একজনের
স্ট্যাটাস:“একবার ভাবলাম কিছুই লেখার দরকার নেই। লিখে কী হবে? কিন্তু
তারপর লিখলাম। হয়তো কাল রাত থেকে মাথার ভেতরে যে যন্ত্রণা কাজ করছে সেটা
উগড়ে দেয়ার জন্যই লিখলাম। আমরা এভাবে অনেক কিছু লিখি, লিখে দায়মুক্ত হতে
চাই হয়তো।”
আরেকজনের মন্তব্য এরকম, ভিডিওটি দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। রাজনের অসহায় নিষ্পাপ মুখ দেখে মনে
হল, পৃথিবীটা এত কদর্য হতে পারে, সেটি মৃত্যুর খানিক আগেও বোধহয় সে বুঝতে
পারেনি...
আরেকজনের স্ট্যাটাস: একবার ভাবলাম কিছুই লেখার দরকার নেই। লিখে কী হবে? কিন্তু তারপর লিখলাম।
হয়তো কাল রাত থেকে মাথার ভেতরে যে যন্ত্রণা কাজ করছে সেটা উগড়ে দেয়ার
জন্যই লিখলাম। আমরা এভাবে অনেক কিছু লিখি, লিখে দায়মুক্ত হতে চাই হয়তো..
বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফেসবুক নিয়ে
মাতামাতির শেষ নেই। মাতামাতি হবেনা কেনো, এই ফেসবুকের কল্যানেই তো অনেকদূরে
থেকেও সবাই কতো কাছাকাছি।
কিন্তু সমস্যা হল ফেসবুক ব্যবহার করতে করতে হঠাৎ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক
হওয়া নিয়ে । হুম এটা বর্তমান সময়ে খুবই ঘটছে। আপনার প্রিয় ফেসবুক
অ্যাকাউন্ট চলতে চলতে হটাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কেন অনেকের মনেই এই
প্রশ্ন জাগে। আর আজকে আমি সেই সব কারণ এর মধ্যে ১০টি প্রধান কারণ আপনাদের
সামান্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো :
১. ফেসবুক স্ট্যাটাসে বা ম্যাসেজে আক্রমাত্মক এমন কিছু লিখবেন না যেটা
পড়ে মনে হয় আপনি কাউকে হুমকি দিচ্ছেন এমনটা যদি করেন তাহলে সেই বাক্তি
যদি আপনার অ্যাকাউন্টে রিপোর্ট করে তাহলে আপনি কিন্তু ব্লক হতেই পারেন,
ভারতীয় ফেসবুক এই অভিযোগটিকে খুবই গুরুত্ব সহ বিচার করে। তাই আপনার ফেসবুক
অ্যাকাউন্ট টি থেকে কাউকে হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ২. আমারা যারা নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট করি তারা ফেসবুকে ফ্রেন্ড লিস্ট
বন্ধু বাড়ানোর জন্য এক দিনে একাধিক জনকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে দিই যা
মোটেও ঠিক নয়। এই ভাবে সীমা অতিক্রম করলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক
হওয়া থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। ৩. একই দিনে যদি ফেসবুক পেজ বা গ্রুপে একই ম্যাসেজ লিখে একাধিক বার
ম্যাসেজ করা হয় তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যেটে পারে । এ ক্ষেত্রে
আপনি সেই সব ম্যাসেজ করার সময় কিছুটা পরিবর্তন করে করে ম্যাসেজ করুন । ৪. আপনি যদি আপনার নিজের ফেসবুক ওয়ালেও একই পোস্ট একাধিক বার দেন তাহলে
সেটাকে ফেসবুক স্প্যাম ভেবে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিতে পারে
তাই এটা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।
৫. আপনি যদি প্রতিদিন একাধিক ফেসবুক ফ্যান পেজে লাইক করেন তাহলে আপনাকে
প্রথমে সতর্কবার্তা দেবে। আপনি যদি তাও একি ভাবে কাজটি চালিয়ে যান তাহলে
অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিতে পারে। ৬. পর্নোগ্রাফি মানে অশ্লীল ফটো কিংবা ফটো পোস্ট বা আপলোড করতে আপনি
ভালবাসলেও ফেসবুক কিন্তু এটা একেবারেই পছন্দ করে না তাই এই অশ্লীল ফটো
ভিডিও পোস্ট থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। ৭. আপনি যদি আপনার নাম বাদে ফেক নাম মানে কোন কোন বড় সেলিব্রেটির নাম
দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট খুলেন এবং সেই অ্যাকাউন্ট এ অভিযোগ হলে আপনার
অ্যাকাউন্ট ব্লক হতে পারে। ৮. আপনি আপনার বাড়ির প্রিয় পোষা বিড়াল বা কুকুর টিকে খুব ভালবাসেন
তাই তার নাম দিয়ে একটা অ্যাকাউন্ট করে দিলেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক
করে দিবে ফেসবুক। ৯. আপনি যদি ভাবে আপনার অ্যাকাউন্ট টিকে আপনার প্রতিষ্ঠান এর বিজ্ঞাপন
এর জন্য ব্যবহার করবেন তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন এই ভাবে কোন অ্যাকাউন্ট
চালালে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক হতে বাধ্য।
১০. এছাড়াও প্রচুর পরিমানে বিরক্তি কর ফটো ট্যাগ , ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে
এবং সেটা ফেসবুক শনাক্ত করতে পারলেই সেই অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়।
প্রায়ই দেখা যায় ভাইরাসের (Virus) কারনে আপনার পিসির ড্রাইভ (Hard Drive) যেমন- C,D,E,F মাউসের ডাবল ক্লিকে open
করতে যাচ্ছেন তখন open With অপশন আসছে অথবা error মেসেজ দেখাচ্ছে। হঠাৎ এ
ধরনের সমস্যা আপনার জন্য সত্যি বেশ একটা বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়। সাধারনত
এই ঘটনাটা ঘটে autorun ভাইরাস অ্যাটাক এর দরুন। তাই আমাদের পিসির C,D,E,F
বা এই জাতীয় ড্রাইভগুলো যখনই open করতে চাই আমরা ব্যর্থ
হয়ে থাকি । আবার অনেক সময় দেখা যায় আপনার ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বা পেনড্রাইভে
অটোরান(autorun.inf) ফাইল রান করছে । সেগুলো Delete করতে যাচ্ছেন কিন্তু Delete হচ্ছে না।
তাই আজকে দেখব কিভাবে এটার একদম সহজ সমাধান করতে পারবেন ।
নিচে সহজ সমাধানগুলো দেয়া হল :-
১। প্রথমেwindows menu+Rপ্রেস করে Run এ যান তারপরcmdটাইপ করুন। (দেখবেন কম্যান্ড প্রমট ওপেন হয়েছে) ।
২। এবার টাইপ করুন “cd\” তার পরে এন্টার চাপুন। (কোটেশন দিবেন না)
৩। এবার আপনার ভাইরাস আক্রান্ত ড্রাইভ এর নাম দিন , যদি D ড্রাইভ হয় তাহলে D: লিখে ইন্টার দিন ।
৪। এবার টাইপ করুন ” attrib -r -h -s autorun.inf”
৫। তারপর টাইপ করুন ”del autorun.inf”
এখন দেখুন আপনার পিসির হার্ড ড্রাইভ ডাবল ক্লিকে(Double Click) ওপেন না হওয়ার সমস্যাটি ঠিক হয়ে গেছে। এভাবে ইচ্ছে করলে আপনি আপনার ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকেই autorun.inf ফাইল Delete করতে পারবেন।
চোখের প্রতিস্থাপন। কিডনির প্রতিস্থাপন। হৃদপিণ্ডের
প্রতিস্থাপন। চিকিৎসায় একের পর এক ধাপ পেরিয়েছে
বিজ্ঞান। বাকি ছিল শুধু মস্তিষ্কের প্রতিস্তাপন। এও কি সম্ভব?
চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাচ্ছে
রাশিয়া। ৩০ বছরের ভ্যালারি স্পিরিডিনভের মস্তিষ্ক
প্রতিস্থাপিত হতে চলেছে অন্য মানুষের দেহ। এই দুঃসাহসিক
অপারেশনটি হতে চলেছে ২০১৭ সালে। অনেকেই এই
প্রতিস্থাপনের সফলতা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। ‘আদেও কি সফল
হবে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন’? প্রশ্ন আর বিস্ময় যতই দানা বাধুক,
বিজ্ঞানের অগ্রগতির দিকে এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপকে কুর্নিশ
করছে গোটা বিশ্ব।
রাশিয়ার ভ্যালারি স্পিরিডিনভ এখন হফম্যান রোগে আক্রান্ত।
মস্তিষ্ক বাদে পুরো দেহটাই অকেজ হয়ে গেছে তাঁর। হুইল
চেয়ারে কাটছে জীবন। মৃত্যুর আগে নিজের মস্তিষ্ক দিয়ে
যেতে চান অন্যের দেহে। তাঁর এই ইচ্ছেকেই সম্মান জানাতে
চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। সফল কিংবা অসফল, ফলাফল যাই
হোক না কেন, মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে প্রথম নজির গড়তে
চলেছেন ৩০ বছরের ভ্যালারি স্পিরিডিনভ।
ইতালিয়ান স্নায়ুবিজ্ঞানী ডঃ সার্জিও ক্যানভারো দাবি
করছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি এই দুঃসহ কাজ করতে পারবেন।
‘মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে সফলতা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ৯০%।
কিন্তু এটাও সত্যি, এক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকিও রয়েছে। আমি তা
অস্বীকার করতে পারিনা’, মন্তব্য ডঃ সার্জিও ক্যানভারোর।
তবে এই দাবিতে সর্বতোভাবে সহমত দিতে পারছেন না
অনেকেই। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকরা মনে করছেন,
এখনও পর্যন্ত ভ্যালারি স্পিরিডিনভের মস্তিষ্ক কাজ করছে।
কিন্তু তা প্রতিস্থাপনের পর সেটি আর কাজ করবে কিনা তা
নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ রয়েছে।
তবে নিজের মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে আশাবাদী ভ্যালারি
স্পিরিডিনভ। তিনি বলেন, ‘যদি আমি আমার গোটা দেহ
প্রতিস্থাপনের সুযোগ পেতাম, আমি পরাধীনতা থেকে মুক্তি
পেতাম’।
শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন।
দেখতে
দেখতে মাহে রামাযান আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
আমরা এসে পৌঁছেছি শেষ দশকে। সৌভাগ্যবান লোকেরা এ মাসে আঁচল ভরে পাথেয়
সংগ্রহ করছে আর হতভাগারা এখনো অন্ধকারের অলি-গলিতে উদ্ভ্রান্তের মত ঘুরে
বেড়াচ্ছে। কিন্তু কল্যাণের বারি বর্ষণ এখনো শেষ হয়ে যায় নি। বন্ধ হয়ে যায়
নি তাওবার দরজা বরং আরও বশি সুযোগ নিয়ে মাহে রামাযানের শেষ দশক আমাদের মাঝে
সমাগত। আজকের এই পোস্টে দেখব আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য এতে কী উপহার
সাজিয়ে রেখেছেন এবং আমরা কীভাবে তা সংগ্রহ করতে পারব।
১) রামাযানের শেষ দশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী-পরিবার সহ সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন:
স্বপ্নে আমাকে লাইলাতুল ক্বদ্র দেখানো হল। কিন্তু আমার এক স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ায় আমি তা ভুলে গিয়েছি। অতএব, তোমরা তা রামাযানের শেষ দশকে অনুসন্ধান কর।”
কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে, দু ব্যক্তির বিবাদের কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ভুলে গেছেন।
গ) শবে কদর কি শুধু রামাযানের সাতাইশ রাতের জন্য নির্দিষ্ট?
আমাদের দেশে সাধারণত: মানুষ শুধু রামাযানের
সাতাইশ তারিখে রাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করে এবং ধারণা করে এ রাতেই শবে কদর
অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এ ধারণা, সুন্নতের সাথে সঙ্গতীপূর্ণ নয়। কারণ, আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
“তোমরা রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান কর।”
হযরত আবু সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার আমি হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) এর কাছে গিয়ে বললাম, আমরা চলুন খেজুর বাগানে গিয়ে হযরত নবী পাক (সাঃ) এর হাদীস আলোচনা করি। অত’পর তিনি চললেন, আমি তাকে বললাম আপনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হতে লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে যা শুনেছেন সে সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। তখন তিনি বললেন একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমযানের প্রথম দশ দিনের এতেকাফ করলেন আমরাও তার সাথে এতেকাফ করলাম। হযরত জিব্রাঈল (আ:) উপস্হিত হয়ে বললেন, আপনি যে নেয়ামতের উদ্দেশ্যে এতেকাফ করছেন তা আরো সম্মুখে তাই হযরত রাসূল পাক (সাঃ) রমজানের মধ্যবর্তী দশদিনও এতেকাফ করলেন। আমরাও তার সাথে এতেকাফ করলাম। এবারও হযরত জিব্রাঈল (আ:) রাসূল পাক(সাঃ)এর দরবারে উপস্হিত হয়ে বললেন আপনি যে নেয়ামতের জন্য এতেকাফ করছেন তা আরো সম্মুখে । তাই হুযুর পাক (সাঃ) রমজানের বিশ তারিখ সকাল বেলায আমাদেরকে উদ্দেশ্যে করে বললেন, তোমাদের মধ্যে যারা আমার সাথে এতেকাফে ছিলে তারা আরো কিছু দিন আমার সাথে এতেকাফ রত অবস্হায় থাকবে। কারণ লাইলাতুল ক্বদর রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাত্রিসমুহের মধ্যে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে তা নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কিন্তু আমি তা ভুলে গিয়েছি। স্বপ্নের কথা আমার এতটুকু মনে আছে, আমি যেন লাইলাতুল ক্বদরের সকাল বেলায় কাদার উপর সেজদা করছি। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, ঐ দিনটি আকাশ খুব পরিস্কার ছিল।কোন প্রকারের বৃষ্টি বাদলের চিহ দেখা যাচ্ছিল না কিন্তু হঠাত আকাশে মেঘ দেখা গেল এবং রমজানের একুশ তারিখ সারারাত বৃষ্টিপাত হল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর মসজিদে খেজুর পাতার চাল ছিল। তার সালাতের স্হানে পানি পড়ে ভিজে গেল। তিনি ফযরের সালাত আদায় করলেন এবং আমরা প্রত্যক্ষ ভাবে দেখলাম তার কপালে ও নাকের উপর স্পষ্ট কাদা লেগে রয়েছে। যাতে হযরত নবী পাক (সাঃ) এর স্বপ্নের সত্যতা প্রমাণিত হল।
ঘ) তবে শেষ সাত দিনের বেজড় রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি:
যেমন, নিম্নোক্ত হাদীসটি:
ابْنِ
عُمَرَ – رضى الله عنهما – أَنَّ رِجَالاً مِنْ أَصْحَابِ النَّبِىِّ – صلى
الله عليه وسلم – أُرُوا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِى الْمَنَامِ فِى السَّبْعِ
الأَوَاخِرِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم – « أَرَى
رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِى السَّبْعِ الأَوَاخِرِ ، فَمَنْ كَانَ
مُتَحَرِّيَهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِى السَّبْعِ الأَوَاخِرِ »
ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণিত যে, কয়েকজন সাহাবী রামা যানের শেষ সাত রাত্রিতে স্বপ্ন মারফত শবে কদর হতে দেখেছেন। সাহাবীদের এ স্বপ্নের কথা জানতে পেরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমি দেখছি তোমাদের স্বপ্নগুলো মিলে যাচ্ছে শেষ সাত রাত্রিতে। অত:এব কেউ চাইলে শেষ সাত রাত্রিতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতে পারে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম) এ মর্মে আরও হাদীস রয়েছে।
কোন কোন সালাফে-সালেহীন সাতাইশ রাত শবে কদর হওয়ার অধিক সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করেছেন। সাহাবীগণের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রা:), মুআবিয়া, উবাই ইবনে কা’ব (রা:) এর মতামত থেকে এটাই বুঝা যায়।
কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম থেকে এভাবে নির্দিষ্টকরে লাইলাতুল কদর হওয়ার কোন হাদীস নাই। তাই
উপরোক্ত সাহবীদের কথার উপর ভিত্তি করে বড় জোর সাতাইশে রাতে শবে কদর হওয়াকে
অধিক সম্ভাবনাময় বলা যেতে পারে। নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। সঠিক কথা হল, শবে কদর কখনো ২১, কখনো ২৩, কখনো ২৫, কখনো ২৭ আবার কখনো ২৯ রাতে হতে পারে।
ঙ)শবেকদরেরবিশেষদুয়া:
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে তখন কোন দুয়াটি পাঠ করব? তিনি বললেন, তুমি বল: