(সাইকো থ্রিলার)
`````````````````
আবিদা!কোথায় তুই? মায়ের ডাক শুনে মাথা সোজা করলো আবিদা।ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই বুঝতে পারলো দুই ঘন্টা ধরে সে এখানে বসে আছে।তক্ষুনি হাতের রুবিক্স কিউবটা টেবিলে রেখে মায়ের কাছে ছুট লাগালো।যেতেই মা বকুনি দিয়ে উঠলো, ‘কোথায় ছিলি এতক্ষন?নিশ্চই রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে ছিলি!’ হ্যাঁ সূচক ভাবে মাথা নাড়ালো সে।‘এই বক্সের মধ্যে কি পেয়েছিস বল তো!সারাদিন এটা নিয়েই পরে থাকিস।পড়া-লেখার তো কোন খবর নেই!দাঁড়া আগে রেজাল্ট আসুক তারপর দেখবি!’ মা গজগজ করতে থাকল।আবিদা আবার নিজের ঘরে গিয়ে ঢুকলো।ঘরে ঢুকে টেবিল থেকে রুবিক্স কিউবটা তুলে নিয়ে খাটে আধ শোয়া হয়ে ওটা মিলানোয় মনোনিবেশ করলো।
রুবিক্স কিউবের ভূত দুই মাস আগে তার মাথায় ঢুকেছে।কে যেন বলেছিল মেয়েদের দিয়ে রুবিক্স কিউব মেলানো হয় না।তারপর থেকেই তার এক রকম জেদ চেপে গেছে।যে ভাবেই হোক সে রুবিক্স কিউব এ ওস্তাদ হবে।আর জিনিসটা দেখতেও কিন্তু বেশ।চারকোণা একটা বক্স,মোট ৫৪টা কিউব,৬ দিকে ৬ রকম রং।গত দুই মাসের পরিশ্রমের ফলে এখন সে প্রায় কয়েক শ এ্যালগরিদম শিখে ফেলেছে।অনেকগুলো সমস্যাও মুখস্ত হয়ে গেছে।পুরো রুবিক্স কিউব মেলাতে তার এখন ৬৬ সেকেন্ড লাগে।কিন্তু তার আরো ভাল করা চাই।যাতে এক মিনিটেরও কম লাগে।যদিও এই রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে থেকে তার লেখা-পড়া আসলেও লাটে উঠেছে।রাতের ঘুম বা দিনের খাওয়ার প্রতি বিন্দুমাত্রও মনোযোগ নেই তার।রাত-দিন শুধু একটাই চিন্তা,কি ভাবে আরও দ্রুত রুবিক্স কিউবটা মেলানো যায়।
মেলাতে মেলাতে কখন যেন চোখ লেগে এসেছিলো বলতেও পারবে না আবিদা।চোখ খোলার পরে বুঝতে পারলো রাত হয়ে গেছে।ঘড়িতে চোখ দিতেই দেখলো রাত সাড়ে নয়টা বাজে।কেউ ডাক দেয়নি।অবশ্য আম্মু ছাড়া বাসায় কেউ নেইও।আব্বু অফিসের কাজে বাইরে আছে।ভাইয়া তার বন্ধুর বাসায়।বিছানা ছেড়ে উঠে রুবিক্স কিউবটা খোঁজা শুরু করলো সে।কোথাও না পেয়ে মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করলো, ‘আম্মু আমার রুবিক্স কিউবটা কোথায়?’ মা বলল, ‘লুকিয়ে রেখেছি।তুমি আর সেটা পাচ্ছ না।’ আবিদাকে দেখে মনে হল এখনি কেঁদে ফেলবে।‘কেন!’ সে বারবার ঘ্যানর ঘ্যানর করতেই থাকলো।এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে তার মা তাকে একটা থাপ্পর দিল।থাপ্পর খেয়ে আবিদা কোন কথা বলল না,এমনকি শব্দও করলো না।চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেল।ওর মার মনে হল রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে থেকে মেয়েটা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।কিছুদিন রুবিক্স কিউব না পেলেই আবার ঠিক হয়ে যাবে।
নিজের রুমে ঢুকে আবিদা কিছুক্ষন বসে থাকার চেষ্টা করলো।বসে থাকতে না পেরে উঠে পায়চারি শুরু করলো।তার রুবিক্স কিউব চাই।যে ভাবেই হোক চাই।রুবিক্স কিউব আর তার মধ্যে কারো আসা চলবে না।রাতে মা শুয়ে পরতেই আবিদা কিচেনে ঢুকল।কিচেন থেকে লম্বা কিচেন নাইফটা নিয়ে মায়ের ঘরে ঢুকলো।কিছুক্ষন পরে যখন বের হলো তখন তার সারা গায়ে রক্ত মাখা,ডান হাতে ছুরি আর বাম হাতে রুবিক্স কিউব।পরদিন বিকালে আবিদার বাবা বাসায় এসে তার স্ত্রী কে মৃত আবিষ্কার করলো।আবিদা তখনও নিজের রুমে বসে এক মনে রুবিক্স কিউব মেলাচ্ছে।
এটা ছয় সপ্তাহ আগের ঘটনা।আবিদা এখন একটা মেন্টাল হসপিটাল আছে।সাইকিক বিভাগের দুই মাত্রার ডেঞ্জারাস ক্যাটাগরির রোগী।এমনিতে সে সাধারন মানুষ,সারাদিন শুধু রুবিক্স কিউব নিয়ে বসে থাকে।কিন্তু কেউ তার রুবিক্স কিউব ধরলে বা সড়ানোর চেষ্টা করলেই পাগলামি শুরু করে।তাকে এখানে আনার তৃতীয় দিন নার্স এসেছিল কেবিন গুছাতে।চাদর বদলানোর জন্য খাটের উপর পরে থাকা রুবিক্স কিউবটা তুলে সাইড টেবিলে রাখতে যেতেই আবিদা সর্বশক্তিতে নার্সের গলা টিপে ধরে।চোখে তার খুনে দৃষ্টি।কেবিন বয় ছুটে এসে তাকে ছাড়িয়ে নেয়।এখন তো এমন অবস্থা যে কারো হাতে রুবিক্স কিউব দেখলেই আবিদা তার উপর হামলা করে।আবিদা এখনো রুবিক্স কিউব মিলিয়ে যাচ্ছে।তার এখন ৪৫ সেকেন্ড লাগে।লালটা বামে,নীলটা উপরে,কমলাটা ডানে এভাবে এক মনে সে মেলাচ্ছে।মিলে গেলে আবার উল্টপাল্টা করছে তারপর আবার মেলাচ্ছে।রুবিক্স কিউব মেলাতে মেলাতে হঠাৎ আয়নায় তার দৃষ্টি গেল।তার নিজের হাতেই রুবিক্স কিউব।সে ফল কাঁটার চাকুটা তুলে নিলো...!!
<<<<<<<বাংলাদেশ>>>>>>>
By :Rakib Hasan
Facebook: Rakib Hasan
`````````````````
আবিদা!কোথায় তুই? মায়ের ডাক শুনে মাথা সোজা করলো আবিদা।ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই বুঝতে পারলো দুই ঘন্টা ধরে সে এখানে বসে আছে।তক্ষুনি হাতের রুবিক্স কিউবটা টেবিলে রেখে মায়ের কাছে ছুট লাগালো।যেতেই মা বকুনি দিয়ে উঠলো, ‘কোথায় ছিলি এতক্ষন?নিশ্চই রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে ছিলি!’ হ্যাঁ সূচক ভাবে মাথা নাড়ালো সে।‘এই বক্সের মধ্যে কি পেয়েছিস বল তো!সারাদিন এটা নিয়েই পরে থাকিস।পড়া-লেখার তো কোন খবর নেই!দাঁড়া আগে রেজাল্ট আসুক তারপর দেখবি!’ মা গজগজ করতে থাকল।আবিদা আবার নিজের ঘরে গিয়ে ঢুকলো।ঘরে ঢুকে টেবিল থেকে রুবিক্স কিউবটা তুলে নিয়ে খাটে আধ শোয়া হয়ে ওটা মিলানোয় মনোনিবেশ করলো।
রুবিক্স কিউবের ভূত দুই মাস আগে তার মাথায় ঢুকেছে।কে যেন বলেছিল মেয়েদের দিয়ে রুবিক্স কিউব মেলানো হয় না।তারপর থেকেই তার এক রকম জেদ চেপে গেছে।যে ভাবেই হোক সে রুবিক্স কিউব এ ওস্তাদ হবে।আর জিনিসটা দেখতেও কিন্তু বেশ।চারকোণা একটা বক্স,মোট ৫৪টা কিউব,৬ দিকে ৬ রকম রং।গত দুই মাসের পরিশ্রমের ফলে এখন সে প্রায় কয়েক শ এ্যালগরিদম শিখে ফেলেছে।অনেকগুলো সমস্যাও মুখস্ত হয়ে গেছে।পুরো রুবিক্স কিউব মেলাতে তার এখন ৬৬ সেকেন্ড লাগে।কিন্তু তার আরো ভাল করা চাই।যাতে এক মিনিটেরও কম লাগে।যদিও এই রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে থেকে তার লেখা-পড়া আসলেও লাটে উঠেছে।রাতের ঘুম বা দিনের খাওয়ার প্রতি বিন্দুমাত্রও মনোযোগ নেই তার।রাত-দিন শুধু একটাই চিন্তা,কি ভাবে আরও দ্রুত রুবিক্স কিউবটা মেলানো যায়।
মেলাতে মেলাতে কখন যেন চোখ লেগে এসেছিলো বলতেও পারবে না আবিদা।চোখ খোলার পরে বুঝতে পারলো রাত হয়ে গেছে।ঘড়িতে চোখ দিতেই দেখলো রাত সাড়ে নয়টা বাজে।কেউ ডাক দেয়নি।অবশ্য আম্মু ছাড়া বাসায় কেউ নেইও।আব্বু অফিসের কাজে বাইরে আছে।ভাইয়া তার বন্ধুর বাসায়।বিছানা ছেড়ে উঠে রুবিক্স কিউবটা খোঁজা শুরু করলো সে।কোথাও না পেয়ে মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করলো, ‘আম্মু আমার রুবিক্স কিউবটা কোথায়?’ মা বলল, ‘লুকিয়ে রেখেছি।তুমি আর সেটা পাচ্ছ না।’ আবিদাকে দেখে মনে হল এখনি কেঁদে ফেলবে।‘কেন!’ সে বারবার ঘ্যানর ঘ্যানর করতেই থাকলো।এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে তার মা তাকে একটা থাপ্পর দিল।থাপ্পর খেয়ে আবিদা কোন কথা বলল না,এমনকি শব্দও করলো না।চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেল।ওর মার মনে হল রুবিক্স কিউব নিয়ে পরে থেকে মেয়েটা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।কিছুদিন রুবিক্স কিউব না পেলেই আবার ঠিক হয়ে যাবে।
নিজের রুমে ঢুকে আবিদা কিছুক্ষন বসে থাকার চেষ্টা করলো।বসে থাকতে না পেরে উঠে পায়চারি শুরু করলো।তার রুবিক্স কিউব চাই।যে ভাবেই হোক চাই।রুবিক্স কিউব আর তার মধ্যে কারো আসা চলবে না।রাতে মা শুয়ে পরতেই আবিদা কিচেনে ঢুকল।কিচেন থেকে লম্বা কিচেন নাইফটা নিয়ে মায়ের ঘরে ঢুকলো।কিছুক্ষন পরে যখন বের হলো তখন তার সারা গায়ে রক্ত মাখা,ডান হাতে ছুরি আর বাম হাতে রুবিক্স কিউব।পরদিন বিকালে আবিদার বাবা বাসায় এসে তার স্ত্রী কে মৃত আবিষ্কার করলো।আবিদা তখনও নিজের রুমে বসে এক মনে রুবিক্স কিউব মেলাচ্ছে।
এটা ছয় সপ্তাহ আগের ঘটনা।আবিদা এখন একটা মেন্টাল হসপিটাল আছে।সাইকিক বিভাগের দুই মাত্রার ডেঞ্জারাস ক্যাটাগরির রোগী।এমনিতে সে সাধারন মানুষ,সারাদিন শুধু রুবিক্স কিউব নিয়ে বসে থাকে।কিন্তু কেউ তার রুবিক্স কিউব ধরলে বা সড়ানোর চেষ্টা করলেই পাগলামি শুরু করে।তাকে এখানে আনার তৃতীয় দিন নার্স এসেছিল কেবিন গুছাতে।চাদর বদলানোর জন্য খাটের উপর পরে থাকা রুবিক্স কিউবটা তুলে সাইড টেবিলে রাখতে যেতেই আবিদা সর্বশক্তিতে নার্সের গলা টিপে ধরে।চোখে তার খুনে দৃষ্টি।কেবিন বয় ছুটে এসে তাকে ছাড়িয়ে নেয়।এখন তো এমন অবস্থা যে কারো হাতে রুবিক্স কিউব দেখলেই আবিদা তার উপর হামলা করে।আবিদা এখনো রুবিক্স কিউব মিলিয়ে যাচ্ছে।তার এখন ৪৫ সেকেন্ড লাগে।লালটা বামে,নীলটা উপরে,কমলাটা ডানে এভাবে এক মনে সে মেলাচ্ছে।মিলে গেলে আবার উল্টপাল্টা করছে তারপর আবার মেলাচ্ছে।রুবিক্স কিউব মেলাতে মেলাতে হঠাৎ আয়নায় তার দৃষ্টি গেল।তার নিজের হাতেই রুবিক্স কিউব।সে ফল কাঁটার চাকুটা তুলে নিলো...!!
<<<<<<<বাংলাদেশ>>>>>>>
By :Rakib Hasan
Facebook: Rakib Hasan
আমরা লেখক -G_Fahim- | Give your writings to this page. This is our official facebook page
dangerous kahini
ReplyDelete